উপমন্যু ছিল মহর্ষি ব্যাঘ্রপাদের পুত্র। তিনি কঠোর তপস্যায় মহাদেবকে তুষ্ট করে অজর, অমর সর্বজ্ঞ সুদর্শন হওয়ার বর লাভ করেন। কৃষ্ণ এর কাছে দীক্ষা নিয়ে মহাদেবের তপস্যা করে অভীষ্ট বর লাভ করেন।
এরপরও উপমন্যু হৃষ্টপুষ্ট থাকছেন দেখে- গুরু পুনরায় এর কারণ জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলেন যে, উপমন্যু আশ্রমের গরুর দুধ খেয়ে থাকেন। গুরু এবার বললেন যে, বিনা অনুমতিতে আশ্রমের গরুর দুধ খাওয়া অন্যায়। এরপর গুরু আশ্রমের গরুর দুধ খাওয়ার অনুমতিও দিলেন না। এরপরও উপমন্যু হৃষ্টপুষ্ট থাকছেন দেখে- গুরু পুনরায় এর কারণ জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলেন যে, উপমন্যু আশ্রমের গরুর দুধ তাদের বাছুর খাওয়ার পর এদের মুখে যে ফেনা থাকে তা খেয়েই ইনি ক্ষুধা মেটান। গুরু এবার বললেন যে, উপমন্যুর জন্য বাছুরেরা দয়াবশত প্রচুর ফেনা উৎপন্ন করে। এতে বাছুরদের পুষ্টিতে ব্যঘাত হয়। এরপর তিনি কিছুদিন অভুক্তই রইলেন। পরে ক্ষুধা সহ্য করতে না পেরে- তিনি আকন্দ পাতা চিবিয়ে খান। ফলে, আকন্দের বিষে তিনি অন্ধ হয়ে একটি কূপে পড়ে যান। এদিকে উপমন্যুর ঘরে ফিরতে বিলম্ব হচ্ছে দেখে- গুরু তাঁকে খুঁজতে খুঁজতে কূপের মধ্যে দেখতে পেলেন। তাঁর কাছ থেকে কূপে পড়ার প্রকৃত কারণ জানতে পেরে গুরু তাঁকে দেব-চিকিৎসক অশ্বিনীকুমাদ্বয়-কে আহ্বান করতে বলে চলে গেলেন। এরপর উপমন্যু এই দেব-চিকিৎসকদ্বয়কে আহ্বান করলে, তাঁরা এসে উপমন্যুকে খাওয়ার জন্য একটি পিঠা দিলেন। কিন্তু উপমন্যু এই পিঠা গুরুকে নিবেদন না করে গ্রহণ করবেন না- এরূপ প্রতিজ্ঞা করলে- অশ্বিনীকুমাদ্বয় তাঁর এরূপ গুরুভক্তি দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বর দিয়ে বললেন- তোমার গুরুর দাঁত কালো ও লোহার মতো হবে, পক্ষান্তরে তোমার দাঁত সোনার হবে এবং তোমার অন্ধত্ব দূর হবে। উপমন্যু দৃষ্টিলাভ করে গুরুর কাছে এসে সব বললেন। এরপর গুরু তাঁকে সকল বেদ ও ধর্মশাস্ত্র দান করে আশীর্বাদ পূর্বক ঘরে ফিরে যাবার অনুমতি দিলেন।
[সূত্র: মহাভারত। আদিপর্ব্ব। উপমন্যু উপখ্যান]
Comments
Post a Comment