Skip to main content

দশানন রাবণকৃত শ্রী শিবতান্ডব স্তোত্রম

দশানন রাবণকৃত শ্রী শিবতান্ডব স্তোত্রম বাংলা অনুবাদ সহ


(১) জটাটবীগলজ্জল প্রবাহ পাবিতস্থলে
গলেহবলম্ব‍্য লম্বিতাং ভূজঙ্গতুঙ্গমালিকাম ।
ডমড্ডমড্ডমড্ডমন্নিনাদবড্ডমর্বয়ং
চকার চন্ডতান্ডবং তনোতু নঃ শিবঃ শিবম।।।।। ।

(২) জটাকটাহ সম্ভ্রম ভ্রমন্নিলিম্পনির্ঝরী
বিলোল বীচিবল্লরী বীরাজমানমূদ্ধনি।।
ধগদ্ধগদ্ধগজ্জলল্ললাট পট্রপাবকে
কিশোরচন্দ্রশেখরেরতিঃ প্রতিক্ষণং মম।।

(৩) ধরাধরেন্দ্রনন্দিনীবিলাসবন্ধুবন্ধুর
স্ফুরদ্দিগন্ত সন্ততি প্রমোদ মানমানসে
কৃপাকটাক্ষ ধোরণীনিরুদ্ধদুর্ধরাপদি
ক্বচিদ্দিগম্বরেমনো বিনোদমেতুবস্তুনি।।।।

(৪) জটাভুজঙ্গ পিঙ্গল স্ফুরৎফণামণিপপ্রভা
কদম্বকঙ্কুমদ্রবপ্রলিপ্তদিগ্বধূমুখে।।
মদান্ধসিন্ধুরস্ফুরত্ত্বগুত্তরীয়মেদুরে
মনো বিনোদ মদ্ভূতং বিভর্তু ভূতভর্তরি।।

(৫) সহস্রলোচনপ্রভৃত‍্যশেষলেখশেখর
প্রসূনধূলিধোরণীবিধূসরাঙঘ্রিপীঠভূঃ।
ভুজঙ্গরাজমালয়া নিবদ্ধজাটজূটকঃ
শ্রিয়ৈ চিবায় জায়তাং চকোর বন্ধুশেখর।।।।

(৬) ললাটচত্বরজ্বলদ্ধনঞ্জয়স্ফুলিঙ্গভা
নিপীতপঞ্চসায়কং নমন্নিলিম্পনায়কম।
সুদাময়ূখলেখয়াবিরাজমানশেখরং
মহাকপালি সম্পদে শিরো জটালমস্তু নঃ।।।।।

(৭) করালভাল পট্টিকাধগদ্ধগদ্ধগজ্জল
দ্ধনঞ্জয়াহুতীকৃতপ্রচন্ড পঞ্চসায়কে।
ধরাধরেন্দ্র নন্দিনী কুচাগ্ৰ চিত্রপত্রক
প্রকল্পনৈকশিল্পিনিত্রিলোচনে রতিমর্ম।।।

(৮) নবীন মেঘমন্ডলী নিরুদ্ধদুর্ধরস্ফুরৎ
তকুহূনিশীথিনী তমঃপ্রবন্ধবদ্ধকন্ধর
নিলিম্পনিরঝরীধরস্তনোতু কৃত্তিসিন্ধুরঃ
কলানিধানবন্ধুরঃ শ্রিয়ং জগদধুরন্ধরঃ।।

(৯) প্রফুল্লনীলপঙ্কজ প্রপঞ্চকালিমপ্রভা
বলন্বিকন্ঠকন্দলীরুচিপ্রবদ্ধকন্ধরম।
স্মরচ্ছিদং পুরচ্ছিদং ভবচ্ছিদং মখচ্ছিদং
গজচ্ছিদান্ধকচ্ছিদং তমন্তকচ্ছিদং ভজে।।

(১০) অখর্বসর্ব মঙ্গলা কলা কদম্বমঞ্জরী
রসপ্রবাহমাধুরী বিজৃম্ভণামধুব্রতম্
স্মরান্তকং পুরান্তকং ভবান্তকং মখান্তকং
গজান্তকান্ধকান্তকং তমন্তকান্তকংভজে।।।

(১১) জয়ত্বদভ্রবিভ্রমভ্রমদ্ভমশ্বসদ
বিনির্গমৎক্রমস্ফুরৎকরালভালহব‍্যবাট।
ধিমিদ্ধিমিদ্ধিমিদধ্বনন্মৃদঙ্গতুঙ্গমঙ্গল
ধ্বনিক্রমপ্রবর্তিতপ্রচন্ডতান্ডবঃ শিবঃ।।

(১২) দৃষদ্বি চিত্রতল্পয়োরভূজঙ্গমৌক্তিকস্রজো
গরিষ্ঠ রত্মলোষ্ঠয়োঃ সুহদ্বিপক্ষপক্ষয়োঃ তৃনারবিন্দচক্ষুষোঃ প্রজামহীমহেন্দ্রয়োঃ সমপ্রবৃত্তিকঃ কদা সদাশিবং ভজাম‍্যহম।।।

(১৩) কদানিলিম্পনিরঝরীনিকুঞ্জকোটরে বসন
বিমুক্তদুরমতিঃ সদা শিরঃস্থমঞ্জলিং বহন্।
বিলোললোচনোললামভাললগ্নকঃ শিবেতিমন্ত্রমুচরন কদা সুখী ভবিমহম।।।।

(১৪) ইমং হী নিত‍্যমেব মুক্তমত্তমোত্তমংস্তবং
পঠনং স্বরনংব্রুবন্নরো বিশুদ্ধিমমেতী সন্ততম
হরে গুরৌ সুভক্তি মাশু যাতি নান‍্যথা গতিং
বিমোহনং হি দেহিনাং সুশঙ্করস‍্য চিন্তনম।।।

(১৫) পূজাবসান সময়ে দশবক্তগীতং
যঃ শম্ভু পূজন পরং পঠতি প্রদোষে।
তস‍্য স্থিরাং রথ গজেন্দ্র তুরঙ্গ যুক্তাং
লক্ষীং সদৈব সুমুখীং প্রদদাতি শম্ভু।।।।

অনুবাদ:-

(১) যিনি জটারূপ অরণ‍্য থেকে নির্গত গঙ্গাদেবীর প্রবাহে ঐ পবিত্র করা সর্পের বিশাল মালা কন্ঠে ধারণ করে ডম রুতে ডমডম ডম।
এই শব্দ তুলে প্রচন্ড তান্ডব নৃত‍্য করছেন ,, সেই শিব যেন আমার কল‍্যাণ করে। এবং আমি প্রনাম জানাই।

(২) যার মস্তক জটারুপ কড়াই তে বেগে ভ্রমণ কারী গঙ্গার চঞ্চল তরঙ্গ লতাসমুহে সুশোভিত হচ্ছে;যার ললাটাগ্নি ধক ধক করে জ্বলছে,,, মস্তকে অর্ধচন্দ্র বিরাজিত, সেই ভগবান শিবে যেন আমার নিরন্তর অনুরাগ থাকে।

(৩) গিরিরাজ কিশোরী পার্বতীর বিশাল কালোপযোগী উচ্চ নিচ মস্তক ভূষণ দ্বারা দশ দিক প্রকাশিত হতে দেখে যার মন আনন্দিত; যার নিত‍্যকৃপাদৃষ্টির ফলে কঠিন বাধা বিপত্তির দূর হয়ে যায়, সেই দিগম্বর স্বরূপ তত্ত্বে যেন আমার মন আনন্দ লাভ করে।।।।।

(৪) যার জটাজুটের মধ্যে সর্পের ফণায় অবস্থিত মণির প্রকাশিত পিঙ্গল ছটা দিশা রূপিনী অঙ্গনাদের মুখে কঙ্কুমের রংছড়ায়; মত্তহাতির বিকশিত চর্মকে উত্তরীয় চাদর রূপে ধারণ করায় যিনি স্নিগ্ধ বর্ণ লাভ করেছেন, সেই ভূত নাথে আমার চিত্ত অদ্ভূত তৃপ্তি বোধ করুক।।।।।।।

(৫) যার চরন পাদুকা ইন্দ্রাদি সকল দেবতার প্রনামের সময় মস্তকে ফুলের পরাগে ধূসরিত হয়,,নাগরাজের মালায় বাধা জটাসম্পন্ন সেই ভগবান চন্দ্রশেখর আমার জন্য চিরস্থায়ী সম্পত্তির ব‍্যবস্থাপক হয়ে থাকুন।

(৬) যিনি তার ললাট রূপ বেদিতে প্রজ্বলিত অগ্নি স্ফুলিঙ্গের তেজে কাম দেবকে ভস্মীভূত করছিলেন, যাকে ইন্দ্রাদি দেবগণ নমস্কার করেন, চন্দ্রের কলাদ্বারা সুশোভিত মুকুট সম্পন্ন সেই মহাদেবের উন্নত বিশাল ললাটে জটিল মস্তক আমার সম্পত্তির কারণ হোক।

(৭) যিনি তার ভীষণ কপালে ধক ধক রূপে জলন্ত অগ্নিতে প্রচন্ড কাম দেবকে আহুতি দান করেছিলেন, গিরিরাজ কন‍্যার স্তনাগ্ৰে পত্র ভঙ্গ রচনা করার একমাত্র শিল্পী, সেই ভগবান ত্রিলোচনের উপরে আমার যেন রতি অনুরাগ থাকে।

(৮) যার কন্ঠে নবীন মেঘ মালা বেষ্টনীতে অমাস‍্যার অরধরাত্রে ন‍্যায় দুরুহ অন্ধকার সম শ‍্যামলতা বিরাজ করে, যিনি গজচর্ম পরিহিত, সেই জগতভার বহন কারী, চন্দ্রের অদ্ধাকৃতিতে মনোহর ভগবান গঙ্গাধর যেন আমার সম্পতির বিস্তার করেন।

(৯) যার কন্ঠদেশ প্রস্ফুটিত নীল কমল সমুহের শ‍্যামশোভার অনুকরন কারী হরিনীর ছবির ন‍্যায় চিহ্নে সুশোভিত এবং যিনি কামদেব ত্রিপুর,ভব দক্ষ, যজ্ঞ হাতি অন্ধকাসুর এবং যমরাজের ও উচ্ছেদ কারী আমি তার ভজনা করি।

(১০) যিনি নিরভিমান পার্বতীর কলারূপ কদম্বমঞ্জরী মকরন্দস্রোতের বৃদ্ধি প্রাপ্তমাধুরী পান কারী মধূপ এবং কামদেব,ত্রিপুর,ভব; আমি তার ভজনা করি।

(১১) যার মস্তকে উপর অতন্ত‍্য বেগে ঘূর্ণিমান ভূজঙ্গের নিঃশ্বাসের ভয়ঙ্কর অগ্নি ক্রমা গত প্রজ্জ্বলিত হচ্ছে, ধিমি ধিমি শব্দের মৃদঙ্গের গম্ভীর মঙ্গলধ্বনি সঙ্গে যিনি প্রচন্ড তান্ডব নৃত‍্যকরেছেন এই ঈশ্বর কে আমি প্রনাম করি।।

(১২) পাথর এবং সুন্দরকোমল বিছানায়, সর্প ও মুক্তা মালা,বহু মূল‍্য রত্ম এবং মৃত্তিকা,মিত্র ও শত্রু পক্ষে,তৃন ও কমল নয়না তরুণীতে, সাধারণ প্রজা ও পৃথিবীর মহারাজ প্রতি যিনি সম ভাব রাখেন, সেই সদা শিব কে আমি যেন প্রতিদিন ভজনা করতে পারি।

(১৩) সুন্দর ললাট সম্পন্ন ভগবান চন্দ্রশেখর চিত্ত সমর্পন করে নিজ কুচিন্তা পরিত‍্যাগ করে, গঙ্গার তীরে কোন কাননের অভ‍্যন্তরে থেকে মস্তকে ওপর হাত জোড় করে বিহ্বল নয়নে শিব মন্ত্র উচ্চারণ করে আমি সুখ লাভ করি।

(১৪) যে ব‍্যাক্তি এইভাবে উক্ত অতি উত্তম স্তোত্র নিত‍্য পাঠ, স্মরণ এবং বর্ননা করে,সে সদা শুদ্ধ থাকে এবং অতি শীঘ্রই সুর গুরু শ্রীশঙ্করের প্রতি প্রকৃত ভক্তি ভাব প্রাপ্ত হয়। সেকখন ও বিপথে যায় না।
কারন শিবের সুচিন্তা প্রানিবরগের মোহ নাশ করে।

(১৫) সায়ং কালে পূজা সমাপ্ত হলে দশানন রাবণ দ্বারা গীত এই শম্ভু পূজন সম্পর্কিত স্তোত্র যিনি পাঠ করেন, ভগবান শঙ্কর সেই ব‍্যাক্তিকে সূখ সম্পত্তি মহাদেব প্রদান করেন।
সমাপ্ত।
ওম নমঃ শিবায়ঃ

Hear the Powerful And Encouraging Song from here👇👇👇👇

Thank you.
Visit Again…

Comments

Popular posts from this blog

আরুণির গুরুভক্তি

প্রাচীন ভারতে শিক্ষার্থীদের গুরুগৃহে গিয়ে থেকে শিক্ষা গ্রহনের একটা রীতি ছিল। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং নৈতিক মূল্যবোধের পাঠ পড়ানোর জন্য বৈদিক ঋষিরা আশ্রম প্রথার প্রচলন করেছিলেন। আশ্রমপ্রথা দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। একটি বর্ণাশ্রম, অন্যটি চতুরাশ্রম। কর্মের ভিত্তিতে সমাজে ব্রাহ্মন, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শুদ্র এই চার শ্রেনীর লোক বাস করত। মানুষের জীবনকালকে ভাগ করা হত ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ, বানপ্রস্থ ও সন্নাস এই চারটি শ্রেনীতে। ব্রহ্মচর্য পালনের সময় শিক্ষার্থীরা গুরুগৃহে যেত। পুঁথিগত বিদ্যা ও নৈতিক মূল্যবোধের পাঠ শেষ করে  নিজেদের বাড়িতে ফিরে এসে গার্হস্থ জীবনে প্রবেশ করত। শিক্ষার্থীরা গুরুগৃহকে নিজের বাড়ির মতোই মনে করত। গুরুও শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তানের ন্যায় স্নেহ ভালবাসা দিতেন। আজকের গল্পটা মহান ঋষি বেদব্যাস রচিত মহাভারত গ্রন্থ থেকে গৃহীত। আজকের গল্প আরুনির উপাখ্যান বা আরুনির উদ্দালক হয়ে ওঠার কাহিনী।  পুরাকালে ভারতে অয়োদ ধৌম্য নামে এক ঋষি ছিলেন। তাঁর আশ্রমে ব্রহ্মচর্য পালনের জন্য শিক্ষার্থীরা আসত। আরুণি, উপমণ্যু এবং বেদ নামে তাঁর তিন শিষ্য ছিল। তখন বর্ষাকাল। জলের তোড়...

বিষ্ণুর দশাবতার

বিষ্ণুর দশ অবতার এর নাম হল --- মৎস্য কূর্ম বরাহ নৃসিংহ বামন পরশুরাম রাম কৃষ্ণ বুদ্ধ কল্কি 1. মৎস্য অবতার মৎস্য ভগবান বিষ্ণুর প্রথম অবতার রূপ। এই অবতার রূপে সত্যযুগে বিষ্ণুর আবির্ভাব। পুরাণ অনুযায়ী পৃথিবীর প্রথম মানুষ মনুকে এক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে মৎস্য রূপে বিষ্ণু আবির্ভূত হন। শরীরের উপরের অংশ পুরুষ মানুষের মত কিন্তু নীচের অংশ মাছের মত। 2. কূর্ম অবতার কূর্ম ভগবান বিষ্ণুর দ্বিতীয় অবতার। সত্যযুগে এই অবতার রূপে বিষ্ণু আবির্ভূত হন। পুরাণে বলা হয় সমুদ্রমন্থনের সময়, মন্থন কালে মন্দর পর্বত সমুদ্রের নীচে ডুকে যাচ্ছিল। তাই সেই সময় বিষ্ণু কূর্ম অবতার অর্থাৎ কচ্চপের রূপে আবির্ভূত হয়ে পর্বত তাঁর পৃষ্ঠে ধারণ করেন। যার ফলে অমৃত প্রাপ্তি সম্পূর্ণ হয়। 3. বরাহ অবতার বন্য শূকরের রূপ ধারণ করেছিলেন ভগবান বিষ্ণু। এটি তাঁর তৃতীয় অবতার। বরাহ অবতারে তিনি সত্য যুগে আবির্ভূত হন। পুরাণ মতে পৃথিবীকে হিরণ্যাক্ষ নামক মহাশক্তিশালী অসুরের হাত থেকে রক্ষা করতে এই অবতার রূপে বিষ্ণু আসেন। অসুর পৃথিবীকে মহাজাগতিক সমুদ্রের নীচে লুকিয়ে রেখেছিলেন। বরাহ রুপী বিষ্ণু হিরণ্যাক্ষের সাথে ক্রমাগত হাজার বছর যুদ্ধ করে তাকে প...